নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম: শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মিত তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু কার নামে নাম করণ হবে এ নিয়ে সব মহলেই আলোচনা চলছে। অধিকাংশরাই চাইছে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের কারো নামে এর নাম করন করা হোক। গত ২৮ জানুয়ারী আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সেতুর পাইলিং কাজের উদ্বোধন করার পর থেকে আলোচনা শুরু হয় সব মহলে। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক ও সমাজের বিশিষ্ঠজনদের সাথে কথা হলে সেতুর নামকরন নিয়ে তাদের মতামত জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমি বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের নামে এই সেতুর নাম করনের জোর দাবি জানাই। শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর সুলতানা কামাল সেতু রয়েছে রুপগঞ্জে এদিকে বন্দর ও সদরের সংযোগ সেতুটির নাম শেখ কামাল বা শেখ জামাল নামে হতে পারে।
নাগরিক কমিটির সম্পাদক আব্দুর রহমান জানান, আমরা বঙ্গবন্ধুর পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞ। তাদের অবদানেই আজ আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ণ দেখতে পাচ্ছি। শেখ জামালের নামে নারায়ণগঞ্জে কোন স্থাপনা নেই। তাঁর নামে এই সেতুর নাম করণ করা হলে ভালো হবে। আমরা দাবি জানাচ্ছি তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর নাম শেখ জামাল সেতু রাখার জন্য। জামাত জোটের আমলে নানান ভাবে বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে হেয় করার চেস্টা চালানো হয়। এখন সময় এসেছে সেব অপচেস্টার সমূচিত জবাব দেয়ার এবং বঙ্গবন্ধুর পরিবারের নামের যথাযথ মূল্যায়ণ করার । স্থায়ী এ ধরনের স্থাপনায় তাদের নাম করাই হবে যথার্থ। এ জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও আওয়ামীলীগ নেতাদের কাছে আমাদের আহবান থাকবে দ্রুত এই প্রস্তাব ঢাকায় পাঠানোর জন্য।
১৬ জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর উপর তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণে প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেক-এ ছয়শ’ কোটি টাকা ব্যয়ের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেতুটির নির্মান করছে চায়নার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো কর্পোরেশন লিমিটেড।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক হয়। ২০২১ সালের মধ্যে সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
কথা হয় বন্দর এলাকার আরিফ আহমেদের সাথে। তিনি একজন চাকুরীজীবী। বলেন, আমাদের বাপ দাদারা বলতো আহারে যদি একটা সেতু থাকতো তবে কতোই না ভালো হতো। আমাদের সময় এসে বাপ দাদার চাওয়া পূরণ হচ্ছে। এ জন্য অঅমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাজে কৃতজ্ঞ। বলবো না কৃতজ্ঞতা স্বরূপ বঙ্গবন্ধুর পরিবারের যে কারো নামে এই সেতুর নাম করা হোক। বরং এটা তাদের পাওনা। এবং তা হবে ন্যায় সঙ্গত। আমরা কোন বিতকির্ত ব্যক্তির নামে এই সেতুর নাম চাই না। এরকম আরো কয়েকজনের সাথে কথা হয়েছে। সকলেই বলেছেন, নাম যদি দিতেই হয় তাহলে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের নামেই হোক।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেছেন, জাতির জনকের পরিবারের নামে সেতুর নাম করনের প্রস্তাব সাধারণ মানুষ করতেই পারেন। এখনো নিমার্ণ কাজ শেষ হয়নি। আগে কাজ শেষ হোক তার পরে আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া জানান, এখনো আমাদের কাছে এরকম কোন প্রস্তাব আসেনি। আর বঙ্গবন্ধুর পরিবারের নামে কোন প্রতিষ্ঠান করতে হলে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হয়। যদি প্রস্তাব আসে তবে তা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবো।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের বন্দরের বহু প্রতীক্ষিত তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতায় চার লেনের ফ্লাইওভার নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শনিবার বিকেলে গণভবন থেকে এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষ থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন। কনফারেন্সে এই দুটি প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। পরে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখেন।
তবে অনেকেই মনে করছেন, এই নারায়ণগঞ্জ থেকেই বঙ্গবন্ধু আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠা করেচিলেন। বঙ্গবন্ধুর সাথে নারায়ণগঞ্জের মানুষের হৃদয়ের টান রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের কারো নামে শীতলক্ষ্যা তৃতীয় সেতুর নাম করন করা হলে সবার কাছেই গ্রহন যোগ্য হবে। ####